পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন ২০২৫

This Template Designed By E10Script

পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ হচ্ছে পুলিশ ভেরিফিকেশন৷ আপনি নতুন পাসপোর্ট তৈরি করেন বা পুরনো পাসপোর্ট রিনিউ করেন সর্বক্ষেত্রেই আপনার পুলিশ ভেরিফিকেশন বাধ্যতামূলক। কারণ দেশের বাহিরে আপনার একমাত্র পরিচয় পত্র হচ্ছে আপনার পাসপোর্ট।

তাই এই গুরুত্বপূর্ণ নথিতে যাতে কোন মিথ্যা বা ভুল তথ্য না থাকে সেজন্যই পুলিশ ভেরিফিকেশন ৷ তাই এই আলোচনায় আমরা ই-পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন নিয়ে আপনাদের সকল অস্পষ্ট ধারণা দূর করার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ। চলুন তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় প্রবেশ করা যাক৷

আরও পড়ুন : ই-পাসপোর্টের সুবিধা এবং অসুবিধা ২০২৫

পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন: 

এই অংশে পুলিশ ভেরিফিকেশন কি, কিভাবে পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হয় সহ ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশনের যাবতীয় সকল তথ্য ধাপে ধাপে আপনাদের দেওয়ার চেষ্টা করব। 

আরও পড়ুন : ই-পাসপোর্ট ফি ২০২৫

ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন

পুলিশ ভেরিভিকেশন কি?

পুলিশ ভেরিফিকেশন হলো একটি যাচাই বাছায় প্রক্রিয়া যা জেলা পুলিশের স্পেশাল শাখার কর্মকর্তা করে থাকে। এটি সাধারণত পাসপোর্ট তৈরি, চাকরির নিয়োগ ইত্যাদির সময় করা হয়৷ এটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নামেও পরিচিত৷ এই ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ায় সাধারণত ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই করা হয়, যেমন নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ,কোন মামলার সাজা প্রাপ্ত আসামী কিনা বা তার নামে কোন মামলা চলমান আছে কিনা ইত্যাদি। মূলত এই তথ্যগুলি যাচাই করে পুলিশ বিভাগ নিশ্চিত হয় যে তারা যথাযথ এবং নিরাপদ। 

পুলিশ ভেরিফিকেশন

পুলিশ ভেরিফিকেশন কারা করে?

পুলিশ ভেরিফিকেশন শব্দটি দেখেই হয়ত বুঝে গেছেন যে এই ভেরিফিকেশক পুলিশ কর্তৃক সম্পাদিত হয়। কিন্তু কোন পুলিশ আসলে ই-পাসপোর্টের পুলিশ ভেরিফিকেশন করে? সাধারণ থানার পুলিশ? ডিবি পুলিশ নাকি অন্য কোন কোন পুলিশ?  আমরা অনেকেই জানি না পুলিশ ভেরিফিকেশন আসলে কারা করে। আর সঠিক জ্ঞান না থাকার কারনে ধারণা করি হয়তো সাধারণ থানার পুলিশ এই ভেরিফিকেশন করে৷ 

কিন্তু আমাদের এই ধারণাটি পুরোপুরি সঠিক নয়৷ মূলত পুলিশ ভেরিফিকেশনের কাজটি করে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের জেলা বিশেষ শাখা (ডিএসবি)৷ তাই ই পাসপোর্টের পুলিশ ভেরিফিকেশন নিয়ে যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে আপনি যদি জেলায় বাসিন্দা হোন সেইক্ষেত্রে  জেলার ডিএসবি অফিসে যোগাযোগ করবেন। আর যদি আপনি মেট্রোপলিটন এলাকার বাসিন্দা হন তাহলে আপিনি উক্ত মেট্রোপলিটন এলাকার সিটি এসবি অফিসে যোগাযোগ করবেন। 

আরও পড়ুন : পাসপোর্ট ফি জমা ব্যাংক ২০২৫ 

কিভাবে পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হয়? 

পুলিশ ভেরিফিকেশন একটি গোপনীয় বিষয়। তাই ই পাসপোর্টের পুলিশ ভেরিফিকেশনের সম্পূর্ণ পক্রিয়া বলা দূরহ। তবে যতটুকু জানা যায় তা হলো, পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রকাশ্য এবং গোপনীয় উভয় ভাবেই হতে পারে। প্রকাশ্য ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে ডিএসবি পুলিশ কর্মকর্তা সরাসরি আপনার এলাকায় দিয়ে সরজমিনে তদন্ত করে দেখতে পারে আপনি যে ঠিকানা পাসপোর্টের আবেদনের সময় ব্যবহার করেছেন তা সঠিক কিনা। উল্লেখ্য আপনি যদি আবেদনের আপনার বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা আলাদা আলাদা ব্যবহার করেন তাহলে আপনার দুই ঠিকানাই পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে। তাই ঝামেলা এড়াতে চাইলে বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা একটি ব্যবহার করাই ভাল। 

আর গোপনীয় ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে পুলিশ তার রেকোর্ড বুক চেক করে দেখবে যে আবেদনকারীর নামে কোন মামলা চলমান আছে কিনা বা কোর্ট থেকে তার বিদেশ ভ্রমনের উপর কোন নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা। যদি সব কিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে ডিএসবি কর্মকর্তা আপনার নামে পজিটিভ রিপোর্ট প্রদান করবে আর যদি সবকিছু ঠিক না থাকে তাহলে নেগেটিভ রিপোর্ট প্রদান করবেন। 

আরও পড়ুন: পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে একাধিক জন্ম নিবন্ধন থাকলে বাতিলের নির্দেশ 

পুলিশ ভেরিফিকেশনে কি কি দেখে? 

  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী জাতীয়তা।
  • আবেদনকারীর নাগরিক সনদ। 
  • আবেদনকারীর স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা।
  • আবেদনকারীর পেশা 
  • আবেদনকারী ফৌজদারি মামলা আসামি কিনা৷ 
  • আবেদনকারীর উপর বিদেশ ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা ইত্যাদি৷ 

এছাড়াও আবেদনকারীর পুরাতন পাসপোর্ট (যদি থাকে), পূর্বে কোন ফৌজদারি মামলার নিষ্পত্তি হলে তার রায়ের কাগজ পত্র ইত্যাদি যাচাই করে।

পাসপোর্টের পুলিশ ভেরিফিকেশনে কত দিন লাগে? 

যেহেতু ই পাসপোর্টের একটি নির্দিষ্ট ডেলিভারি ডেট থাকে তাই পুলিশ ভেরিফিকেশনে খুব বেশি দিন সময় লাগে না। সাধারণত ২-৪ দিনের মধ্যেই পাসপোর্টের ভেরিফিকেশন পক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যায়। তবে বিশেষ কোন ঝামেলার ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশি দিন সময় লাগতে পরে। তবে সেটা একেবারে কমন কোন ঘটনা না। 

শেষ কথা : 

পরিশেষে বলতে চাই ই পাসপোর্টের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই ই পাসপোর্টের পুলিশ ভেরিফিকেশনে সব সময় সঠিক এবং সত্য তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করবেন। আর কোন প্রয়োজনে যদি এসবি কর্মকর্তাদের কোন সহায়তার প্রয়োজন হয় তাহলে আবশ্যই সহায়তা করার চেষ্টা করবেন। এবং কোন প্রয়োজনে যদি আপনাকে স্বাক্ষাত করতে বলে তাহলে আবশ্যই তাদের সাথে স্বাক্ষাত করবেন। এই ক্ষেত্রে ভয় পাওয়ার বিশেষ কোন প্রয়োজন নেই। এই ছিল ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা। আশা করি পোস্টটি আপনার জন্য বেশ সহায়ক হবে। 

Imran Hossain

আমি ইমরান হোসেন৷ দেশের স্বনামধন্য একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে এখন পাসপোর্ট, ভিসা এবং প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করছি৷ যার মাধ্যমে অর্জিত যৎসামান্য জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা এখানে নিয়মিত শেয়ার করার চেষ্টা করি।

Post a Comment

Previous Post Next Post
This Template Designed By E10Script