ইউরোপ মহাদেশের অন্যতম উচ্চ মধ্য অর্থনীতির দেশ হলো সার্বিয়া। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ লোক সার্বিয়া যাওয়ার চেষ্টা করে। সেন্ট্রাল ইউরোপের দেশ গুলোর তুলনায় সার্বিয়ার ভিসা রেশিও এবং খরচ কম হওয়ায় বাংলাদেশিদের মাঝে সার্বিয়া যাওয়ার চাহিদা বেশি। যেহেতু প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ লোক সার্বিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা করে সেহেতু তাদের অধিকাংশেরই কমন প্রশ্ন, "সার্বিয়া কি সেনজেন ভুক্ত দেশ?" বা "সার্বিয়া কি সেনজেন ভুক্ত হবে?" ইত্যাদি।
এই আলোচনায় আমরা এই বিষয় গুলো নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করবো। যাতে সার্বিয়া সেনজেন ভুক্ত দেশ কি না সে বিষয়ে আপনারা একটি স্পষ্ট ধারণা পান। চলুন তাহলে আর কথা বাড়িয়ে শুরু করা যায়।
আরও পড়ুন:
সার্বিয়া কি সেনজেন ভুক্ত দেশ?
ভৌগলিক ভাবে সার্বিয়া মধ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের একটি দেশ। তবে দেশটি ইউরোপ মহাদেশের অন্তর্ভুক্ত হলেও দেশটি সেনজেন ভুক্ত দেশ নয়। এমনকি দেশটি দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্তও কোন দেশ নয়।
তবে অর্থনৈতিক ভাবে উন্নত দেশটি ২০১৪ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিউনের সাথে আলোচনা চালিয়ে আসছে। তারা মূলত ২০২৫ সালের মধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের লক্ষ্যে এই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
তবে সম্প্রতি সার্বিয়া সরকার পতন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা কারণে ২০২৫ সালে যোগদান করতে পারবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। তবে ইউরোপ মহাদেশের দেশ হওয়ায় এবং অর্থনৈতিক ভাবে উন্নত দেশ হওয়ায় আশা করা যাচ্ছে দেশটি দ্রুত রাজনৈতিক অস্থিরতা কাটিয়ে উঠবে। এবং ২০২৫ সালের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দানের লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে।
সার্বিয়া কি সেনজেন হবে?
সার্বিয়া এখন পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশে হতে পারেনি । সুতরাং সার্বিয়া সেনজেন ভুক্ত হবে কিনা সেটা বোঝার জন্য আপনাকে সার্বিয়ার ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অবস্থা বুঝতে হবে। তাহলে সার্বিয়া সেনজেন ভুক্ত হবে কিনা সেটি ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।
ভৌগোলিক ভাবে সার্বিয়ার প্রতিবেশি দেশ গুলো হলো উত্তরে হাঙ্গেরি, উত্তর-পূর্বে রোমানিয়া, দক্ষিণ-পূর্বে বুলগেরিয়া, দক্ষিণে উত্তর মেসিডোনিয়া, ক্রোয়েশিয়া ও বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা পশ্চিমে মন্টিনিগ্রো। প্রতিবেশী দেশ গুলোর মধ্যে হাঙ্গেরি, ক্রোয়েশিয়া, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া সেনজেন ভুক্ত দেশ। সুতরাং ভৌগোলিক ভাবে যদি এই অঞ্চলে পরবর্তীতে কোন দেশ সেনজেন ভুক্ত হয় তাহলে আশা করা যায় সেটি সার্বিয়াই হতে পারে।
আরও পড়ুন: হাঙ্গেরি যেতে কত টাকা লাগে ২০২৫
অর্থনৈতিক ভাবে সার্বিয়া ইউরোপের উচ্চ-মধ্যম আয়ের একটি দেশ। এই অঞ্চলের সেনজেন ভুক্ত অন্যান্য দেশে অর্থনীতি এবং সার্বিয়ার অর্থনীতি প্রায় একই ক্যাটাগরির। তাই অর্থনৈতিক বিবেচনায়ও সার্বিয়া সেনজেন ভুক্ত হওয়ার যোগ্য।
সার্বিয়া এখন পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সেনজেন ভুক্ত না হওয়ার পিছনে অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক। রাজনৈতিক ভাবে সার্বিয়া অনেকটা রাশিয়াপন্থী। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সেনজেন ভুক্ত প্রায় সকল দেশই আমেরিকাপন্থী।
আর আপনারা সকলেই জানেন আমেরিকার এবং রাশিয়ার মধ্যে রাজনৈতিক মতাদর্শ গত ভাবে দন্দ রয়েছে। যে কারণে সার্বিয়ার ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সেনজেনে প্রবেশের পথ বেশ কঠিন হয়ে গিয়েছে। তবে বিশ্ব রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই।
আর সম্প্রতি যেহেতু সার্বিয়ায় রাশিয়া পন্থী সরকারের পতন ঘটেছে সেহেতু পরিবর্তীত পরিবেশ পরিস্থিতির উপর সার্বিয়ার ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সেনজেন ভুক্ত হওয়া অনেকটা নির্ভর করবে। যদি সার্বিয়ার পরবর্তী সরকার আমেরিকার আস্থা ভাজন হয় তাহলে আশা করা যায় দ্রুত দেশটি সেনজেন ভুক্ত হয়ে যাবে।
শেষ কথা:
সার্বিয়া নন সেনজেন তালিকা ভুক্ত ইউরোপের দেশে। দেশটিতে যেতে তুলনামূলক ভাবে কম টাকা লাগায় দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মাঝে দেশটির বেশ চাহিদা রয়েছে৷ তবে বাংলাদেশ থেকে যারা ইউরোপের কম উন্নত কোন দেশে যান তাদের অন্যতম এইটি লক্ষ্য থাকে যে কোন ভাবে সেন্ট্রাল ইউরোপ কোন দেশে গিয়ে সেটেল্ড হওয়া৷ যার কারণে যারা সার্বিয়া যাওয়া পরিকল্পনা করে তাদের নিকট অন্যতম একটি জিজ্ঞাসা থাকে সার্বিয়া সেনজেন ভুক্ত দেশ কি না বা সার্বিয়া সেনজেন ভুক্ত হবে কিনা৷
যদিও সার্বিয়ার বেতন ও লাইফ স্টাইল সেন্ট্রাল ইউরোপের দেশের তুলনায় খুব পিছিয়ে নেই৷ যাইহোক এই ছিল আমাদের আজকের আলোচনা। আশা করি কিছুটা হলেও পোস্টটি আপনার উপকার করবে। ধন্যবাদ