তুর্কি সাইপ্রাস দেশ কেমন ২০২৫

This Template Designed By E10Script

পৃথিবীর এক অন্যতম অদ্ভুত দেশ হলো সাইপ্রাস। আপনারা যারা সাইপ্রাস যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তারা হয়তো জানেন যে সাইপ্রাস রাজনৈতিক ভাবে বিভক্ত একটি দেশ। দেশটির একটি অংশ তুর্কি নিয়ন্ত্রণাধীন। আর একটি অংশ গ্রীস নিয়ন্ত্রণাধীন। তুর্কি নিয়ন্ত্রিত অংশ তুর্কি সাইপ্রাস নামে পরিচিত। আর গ্রীস নিয়ন্ত্রিত অংশ গ্রিক সাইপ্রাস নামে পরিচিত। তুর্কি সাইপ্রাস অংশটি কে এশিয়া মধ্যে ধরা হয় এবং গ্রিক সাইপ্রাস অংশটিকে ইউরোপ মধ্যে ধরা হয়। আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় হচ্ছে তুর্কি সাইপ্রাস কেমন দেশ সেটি নিয়ে। এখানে আমরা, তুর্কি সাইপ্রাসের কর্ম পরিবেশ, তুর্কি সাইপ্রাস বেতন কত, টাকার মান এবং তুর্কি সাইপ্রাস যাওয়ার খরচ ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করবো। 

আরও পড়ুন: সাইপ্রাস বেতন কত ২০২৫

তুর্কি সাইপ্রাস দেশ কেমন

তুর্কি সাইপ্রাস দেশ কেমন

পৃথিবীর প্রতিটি দেশই বিদেশি কর্মীদের জন্য কেমন হবে সেটি নির্ভর করে বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর। তার মধ্যে মধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য কিছু হলো, কর্ম পরিবেশ, কাজের চাহিদা, বেতন ভাতা, থাকা যাওয়ার খরচ ইত্যাদির উপর। মূলত এই বিষয় গুলোর উপর ভিত্তি করেই বলা হয় কোন দেশ কাজের জন্য কেমন। 

তুর্কি সাইপ্রাসের কর্মপরিবেশ কেমন?

এশিয়ার দেশ গুলোর মধ্যে তুলনামূলক ভালো কর্ম পরিবেশ হলো তুর্কি সাইপ্রাসে। তুর্কি সাইপ্রাসের সুপারশপ, রেস্টুরেন্ট এবং বিভিন্ন কোম্পানি গুলোতে সাধারণত তুর্কি এবং ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়। তাই আপনি যদি এই দুই ভাষার কোন একটিতে মোটামুটি পারদর্শী হোন তাহলে এখানকার কর্ম জীবনকে আপনি খুব ভালো ভাবে উপভোগ করতে পারবেন। আর তুর্কি সাইপ্রাসে বিভিন্ন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান ভেদে প্রতিদিন ৮ ঘন্টা থেকে ৯ ঘন্টা কাজ করতে হবে। এবং সপ্তাহে কাজ করতে হয় ৬ দিন। রবিবার এখানে সাপ্তাহিক ছুটি। 

তবে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে এই সময়সীমার বাহিরেও আপনাকে কাজ করতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে এটি আপনার ওভারটাইম কাজ হিসাবে যোগ হবে। যার জন্য আপনি একটি নির্ধারিত বেতন পাবেন। তুর্কি সাইপ্রাসে সাধারণত থাকা খাওয়া মালিক পক্ষই বহন করে। যদি কোন মালিক আপনার থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা নাও করে সেক্ষেত্রে মাস শেষে তারা থাকা খাওয়া বাবদ একটি নির্দিষ্ট এমাউন্ট আপনাকে সেলারির সাথে দিয়ে দিবে।

কোন কাজের চাহিদা বেশি?

তুর্কি সাইপ্রাস কোন কাজের চাহিদা বেশি

তুর্কি সাইপ্রাসে সব চেয়ে চাহিদা সম্পন্ন কাজ হলো কন্সট্রাকশন রিলেটেড কাজ। এখানে এই রিলেটেড কাজের চাহিদা সব চেয়ে বেশি। কন্সট্রাকশন রিলেটেড কাজ গুলোর মধ্যে রয়েছে রাজ মিস্ত্রর কাজ, টাইলসের কাজ, রঙের কাজ, ইলেকট্রনিকসের কাজ, প্লাম্বিং এবং ফিটিংসের কাজ ইত্যাদি। গ্রীষ্ম কাল বা শীত কাল উভয় সময়ই এই কাজের চাহিদা সমান। 

এছাড়াও তুর্কি সাইপ্রাসে অন্যান্য চাহিদা সম্পন্ন কাজ গুলো হলো, কৃষি কাজ, সুপার শপে কাজ, রেন্টুরেন্টের কাজ, বেকারিতে কাজ ইত্যাদি। তবে তুর্কি সাইপ্রাসে যে সব কাজ টুরিজম কেন্দ্রিক সে কাজ গুলোতে মূলত অফ সিজনে চাহিদা কম থাকে। আবার টুরিজম সিজনে ব্যাপক চাহিদা থাকে। আর মোটামুটি ইংরেজি বা তুর্কি ভাষা জানা থাকলে সুপার শপ গুলোতে ভালো কাজের চাহিদা রয়েছে।

তুর্কি সাইপ্রাস বেতন কত?

এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় সব চেয়ে বেশি বেতন পাবেন মূলত তুর্কি সাইপ্রাসে। তুর্কি সাইপ্রাসের বেতন আর ইউরোপের দেশ গুলোর বেতন প্রায় সমানই বলা যায়। বর্তমানে ২০২৫ সালে এখানে সরকার নির্ধারিত বেসিক বেতন হলো ৩৫ হাজার লিরা। যেহেতু তুর্কি সাইপ্রাস তুরস্ক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তাই এখানে বেতন তুরস্কের মুদ্রা লিরাতেই দেওয়া হয়। বাংলাদেশি টাকায় এই বেতন কে রুপান্তর করলে দাঁড়ায় প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। যেহেতু নতুন বছর শুরু হলো দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কথা মাথায় রেখে তুর্কি সাইপ্রাসের শ্রম মন্ত্রণালয় বেতন আরো বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করছে। 

আরও পড়ুন: গ্রীস সাইপ্রাস বেতন কত ২০২৫

তুর্কি সাইপ্রাস টাকার মান কত?

রাজনৈতিক ভাবে তুর্কি সাইপ্রাস তুরস্কের নিয়ন্ত্রণে থাকায় তুর্কি সাইপ্রাসে ব্যবহৃত অফিশিয়াল মুদ্রা হচ্ছে তুর্কি লিরা। বর্তমান (২০২৫) অন্তর্জাতিক বাজার মূল্য অনুসারে ১ তুর্কি লিরা সমান বাংলাদেশি ৩.৪১ পয়সা। সে হিসাবে তুর্কি সাইপ্রাস ১ টাকা বাংলাদেশের ৩ টাকা ৪১ পয়সা। এবং ১০০ তুর্কি লিরা সমান বাংলাদেশের ৩৪০ টাকা ৭৬ পয়সা। 

তুর্কি সাইপ্রাস যেতে কত টাকা লাগে?

বর্তমানের বাংলাদেশ থেকে তুর্কি সাইপ্রাসে যাওয়ার ভিসা বন্ধ রয়েছে। তবে বিভিন্ন সোর্স থেকে ধারণা করা হচ্ছে চলতি মাসে ভিসা সেবা পুনরায় চালু হতে পারে। তবে বাংলাদেশ থেকে ভিসা বন্ধ হলেও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ থেকে তুর্কি সাইপ্রাসের ভিসা চালু রয়েছে। ফলে আপনি চাইলে অন্য কোন দেশের মাধ্যমে তুর্কি সাইপ্রাস যেতে পারবেন। এখন আসি তুর্কি সাইপ্রাস যেতে কত লাগে এই প্রসঙ্গে। 

আসলে তুর্কি সাইপ্রাস সহ পৃথিবীর অন্য কোন দেশে যাওয়ার জন্য কত টাকা লাগবে সে নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। কারণ আপনি কার মাধ্যমে, কোন ভিসায় কোন দেশে যাচ্ছেন তার উপর খরচ কম বেশি হয়ে থাকে। তুর্কি সাইপ্রাসও এর ব্যতিক্রম নয়৷ তুর্কি সাইপ্রাসে আপনার পরিচিত কেউ যদি অবস্থান করে করে তাহলে তার মাধ্যমে আপনি অল্প টাকার মাধ্যমেই তুর্কি সাইপ্রাস যেতে পারবেন। 

আর আপনি যদি দালাল বা এজেন্সির মাধ্যমে যান তাহলে খরচ কিছুটা বেশি পড়বে। বর্তমানে আপনি যদি কোন এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে তুর্কি সাইপ্রাস যেতে চান তাহলে ৭ লক্ষ থেকে ৯ লক্ষ টাকার মধ্যেই তুর্কি সাইপ্রাস যেতে পারবেন। যদিও অনেকে ৬ লক্ষ টাকাতেই তুর্কি সাইপ্রাস গিয়েছেন। এই বিষয়টি নির্ভর করে মূলত আপনি কার সাথে কিভাবে ডিল করছেন তার উপর। সঠিক লোক এবং ডিল করার উপরই মূলত কত টাকা লাগবে এটি নির্ভর করছে। 

আরও পড়ুন: গ্রিক সাইপ্রাস যেতে কত টাকা লাগে ২০২৫

শেষ কথা: 

যদিও সাময়িক সময়ের জন্য তুর্কি সাইপ্রাসের ভিসা বন্ধ রয়েছে তবুও বললো বিদেশ যাওয়ার জন্য এশিয়ার মধ্যে অন্যতম সেরা একটি দেশ হলো তুর্কি সাইপ্রাস। আর তুর্কি সাইপ্রাসে বেতনও যেহেতু ভালো এবং জীবন যাত্রার ব্যয়ও তুলনা মূলক ভাবে কম। সেহেতু দ্রুত ভালো টাকা উপার্জনের একটি অন্যতম গন্তব্য হলো তুর্কি সাইপ্রাস। পাশাপাশি ইউরোপের কোন দেশে যাওয়ার চেয়ে তুর্কি সাইপ্রাস যাওয়ার খরচও কিছুটা কম। তাই সব কিছু মিলিয়ে বলা যায় ২০২৫ সালে এসে বিদেশ যাওয়ার জন্য তুর্কি সাইপ্রাস একটি ভালো দেশ। তুর্কি সাইপ্রাস দেশ কেমন এই নিয়ে আপাতত এই ছিল আমাদের আজকের আলোচনা। 

Sazzadul Islam

আমি সাজ্জাদুল ইসলাম৷ দীর্ঘ সময় থেকে পাসপোর্ট, ভিসা এবং প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করছি৷ সে অভিজ্ঞতার আলোকে এখানে নিয়মিত পাসপোর্ট, ভিসা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমসাময়িক তথ্য ও আপডেট দেওয়ার চেষ্টা করি।

Post a Comment

Previous Post Next Post
This Template Designed By E10Script