অনলাইনে মালয়েশিয়া ভিসা চেক ২০২৫

This Template Designed By E10Script

বাংলাদেশে থেকে বিদেশগামী ব্যক্তিদের নিকট অন্যতম একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হলো মালয়েশিয়া। বাংলাদেশ সেসব দেশে শ্রম শক্তি রপ্তানির করে সেগুলোর প্রথম ৫টির মধ্যেই মালয়েশিয়ার অবস্থান। বর্তমানে মালয়েশিয়ায় প্রায় ১০ লক্ষ বাংলাদেশি প্রবাসী অবস্থান করে। এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিয়ত বিশাল সংখ্যক লোক মালয়েশিয়াই যাচ্ছে এবং অনেকে যাওয়ার প্রক্রিয়া মধ্যে রয়েছে। বিগত কয়েক বছর থেকে বিশাল এই জনগোষ্ঠীর অন্যতম একটি একটি উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে মালয়েশিয়ার ভিসা। যার প্রেক্ষিতে এই আলোচনায় আমরা মালয়েশিয়ার ভিসা এবং অনলাইনে মালয়েশিয়া ভিসা চেক প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করবো। চলুন তাহলে শুরু করা যায়৷ 

আরও পড়ুন: পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ভিসা চেক সৌদি ২০২৫

অনলাইনে মালয়েশিয়া ভিসা চেক

অনলাইনে মালয়েশিয়া ভিসা চেক:

আপনি যদি বাংলাদেশের কোন এজেন্সি বা দালালকে মালয়েশিয়া ভিসা করতে দেন, কিংবা অনেক দিন হয়ে গেছে দালাল আপনার পাসপোর্ট নিয়ে রেখেছে এখন আপনি আপনার পাসপোর্টে ভিসা লেগেছে কিনা দেখতে চান, অথবা আপনি মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন, আপনার ভিসার মেয়াদ আর কতদিন আছে সেটি দেখতে চান তাহলে বেশ কয়েকটি উপায়ে আপনি আপনার ভিসাটি চেক করতে পারবেন। এগুলো হলো :

আরও পড়ুন: ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা আপডেট 2025

পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ভিসা চেক:

এই নিয়মে ভিসা চেক করার জন্য শুধু মাত্র পাসপোর্ট নাম্বারই যথেষ্ট। যদি আপনার কাছে শুধুমাত্র পাসপোর্ট নাম্বারটি থেকে থাকে তাহলে আপনি খুব সহজেই এটি দিয়ে মালয়েশিয়ার ভিসা চেক করতে পারবেন। এর জন্য প্রথমে আপনাকে আপনার স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের যে কোন একটি ব্রাউজার ওপেন করতে হবে। তারপর সেখানে Malaysia Visa and Pass Status লিখে সার্চ দিতে হবে। এরপর সর্বপ্রথম

.: MyIMMs - e-Services :. লেখা যুক্ত যে সাইটটি আসবে তার উপর ক্লিক করতে হবে। একটু অপেক্ষা করার পর আপনার সামনে মালয়েশিয়ার ভিসা চেক করার ওয়েবসাইটটি ওপেন হবে। 

মালয়েশিয়া ভিসা চেক

আপনি এইসব ঝামেলা এড়াতে চাইলে সরাসরি এখানে ক্লিক করে মালয়েশিয়ার ভিসা চেক করার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট প্রবেশ করতে পারবেন। তারপর বাদিকের লাল স্টার দেওয়া বক্স গুলো থেকে Document No বক্সে আপনার পাসপোর্ট নাম্বারটি দিতে হবে এবং Country Issue থেকে বাংলাদেশ সিলেক্ট করে SEARCH বাটনে ক্লিক করতে হবে। SEARCH বাটনে ক্লিক করার সাথে সাথেই আপনার নাম, দেশ, ভিসা ইস্যুর তারিখ, ভিসার মেয়াদ, বর্তমান স্ট্যাটাস সহ যাবতীয় তথ্য নিচে প্রদর্শিত হবে। 

আরও পড়ুন: মালয়েশিয়া কলিং ভিসার খবর | ভিসা বন্ধ না খোলা ২০২৫

মালয়েশিয়া ই-ভিসা চেক:

এই নিয়মে ভিসা চেক করার জন্য আপনার পাসপোর্ট নাম্বার এবং স্টিকার নাম্বার প্রয়োজন হবে। এই নিয়মে ভিসা চেক করার জন্য আগের নিয়মেই আপনাকে আপনার স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের যে কোন একটি ব্রাউজার ওপেন করে গুগলে প্রবেশ করতে হবে। তারপর গুগলের সার্চ বক্সে Malaysia Visa Check লিখে সার্চ দিতে হবে। এরপর প্রথম যে সাইটটি আসবে সেখানে প্রবেশ করতে হবে ।

অথবা আপনি সরাসরি এই লিংকে https://malaysiavisa.imi.gov.my/evisa/vlno_checkstatus.jsp এ ক্লিক করে মালয়েশিয়ার ই-ভিসা চেক করার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট প্রবেশ করতে পারবেন। এরপর Passport Number বক্সে আপনার পাসপোর্ট নাম্বারট, Sticker Number বক্সে স্টিকার নাম্বার এবং Answer বক্সে ক্যাপচা কোড এবং I have obtained my eVISA তে টিক মার্ক দিয়ে CHECK বাটনে ক্লিক করতে হবে। CHECK বাটনে ক্লিক করার পর নিচে পাসপোর্ট নাম্বার, আপ্লিকেশন স্টেটাস, ভিসা ইস্যুর স্থান, বর্তমান স্ট্যাটাস সহ যাবতীয় তথ্য চলে আসবে। 

এখন আপনি ভাবছেন স্টিকার নাম্বার কোথায় পাবেন? চিন্তার কোন কারণ নেই এজেন্সি থেকে আপনাকে যে ই-ভিসার কপিটি দেওয়া হবে সেখানেই Sticker Number টি পেয়ে যাবেন।

আরও পড়ুন: সাইপ্রাস ভিসার বর্তমান অবস্থা ২০২৫

মালেশিয়ার ই-ভিসা

মালয়েশিয়ার ভিসা:

বাংলাদেশ থেকে সাধারণ তিন ধরনে ভিসায় মালয়েশিয়া যাওয়া যায়। ১. টুরিস্ট ভিসা ২. স্টুডেন্ট ভিসা এবং ৩. কলিং ভিসা। 

টুরিস্ট ভিসা:

মালয়েশিয়ায় সাধারণ ভ্রমন, ব্যবসায়ীক কার্যক্রম, চিকিৎসা কিংবা অন্য কোন প্রয়োজনে সল্প সময় অবস্থানের জন্য যে ভিসাটি ইস্যু করা হয় সেটি হলো টুরিস্ট ভিসা। আপনার যদি উল্লেখিত কোন প্রয়োজনে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে আপনাকে টুরিস্ট ভিসার মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় যেতে হবে। তবে এই ভিসা ব্যবহার করে আপনি মালয়েশিয়ায় কাজ করতে যেতে পারবেন না। 

এই ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। সাধারণত, বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য মালয়েশিয়া ভ্রমনে ক্ষেত্রে Single Entry Tourist Visa ইস্যু করা হয়। যা মালয়েশিয়া প্রবেশের পর থেকে ৩০ দিন পর্যন্ত বৈধ থাকে। অর্থাৎ এই ভিসার মেয়াদ হচ্ছে ৩০ দিন। এবং ৩০ দিন অতিক্রম হয়ে গেলে আপনি সেখানে পুরোপুরি অবৈধ হয়ে যাবে। 

আরও পড়ুন: ক্রোয়েশিয়া ভিসা আপডেট ২০২৫

যেহেতু টুরিস্ট ভিসা একটি নির্দিষ্ট দিনের জন্য ইস্যু করা হয় তাই এই ভিসার আবেদনের সময় আপনাকে বেশ কিছু জিনিস নিশ্চিত করতে হয়। সেগুলো হলো মালয়েশিয়ায় থাকার জন্য হোটেল রিজার্ভেশন, যাওয়া আসার ফ্লাইট টিকিট এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট । 

বর্তমানে মালয়েশিয়ার ভিসা সিস্টেম ই ভিসায় শিফট করেছে যার ফলে টুরিস্ট ভিসা আবেদনটি অনলাইনের মাধ্যমে করতে হবে। মালয়েশিয়া সরকার eVisa সিস্টেমের মাধ্যমে অনলাইনে টুরিস্ট ভিসা আবেদন গ্রহণ করে। যার কারণে দ্রুত এবং সহজে টুরিস্ট ভিসার পাওয়া যায়। তবে সাধারনত আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর ৭-১৫ কার্যদিবসের মধ্যেই টুরিস্ট ভিসার অনুমোদন পাওয়া যায়। টুরিস্ট ভিসার অনুমোদন পাওয়ার পর আপনি এই ভিসায় একবার মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করলে ২৯ দিন পর্যন্ত অবস্থান করতে পারবেন। তবে মাথায় রাখবেন টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই আপনাকে দেশে ফিরে আসতে হবে।

আরও পড়ুন: পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ভিসা চেক 2025

স্টুডেন্ট ভিসা:

মালয়েশিয়া যাওয়ার সবচেয়ে সহজ ভিসা হলো স্টুডেন্ট ভিসা। তবে এর জন্য অবশ্যই আপনাকে মালয়েশিয়ার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি থাকতে হবে। বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা হলো উচ্চমাধ্যমিক পাস। যদিও মালয়েশিয়ার কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার জন্য বয়সের কোন লিমিট নেই তবে শিক্ষা গ্যাপ ১০ বছরের বেশি হওয়া যাবে না। 

মালয়েশিয়ায় কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরই কেবল আপনি স্টুডেন্ট ভিসার (Student Pass) জন্য আবেদন করতে পারবেন। এবং এই ভিসার আবেদন করার সময় আপনাকে মালয়েশিয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত Offer Letter বা ভর্তি পত্র সংগ্রহ করতে হবে। এবং অফার লেটার সহ মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের ই-ভিসার মধ্যমে আবেদন করতে হবে। 

এছাড়াও আবেদনের সময় আপনাকে পাসপোর্ট, ভর্তি প্রমাণ পত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, স্বাস্থ্য পরীক্ষা রিপোর্ট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে। স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ সাধারণত এক বছরের জন্য হয়ে থাকে। তবে শিক্ষার্থীর পঠিত কোর্সের মেয়াদের সাথে সঙ্গতি রেখে ভিসার মেদায় শেষ হয়ে গেলে মেয়াদ পুনরায় বৃদ্ধি করা যাবে। 

এই ভিসা মাধ্যমে আপনি মালয়েশিয়ায় থাকতে এবং সেখানের কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে পারেন। পাশাপাশি, মালয়েশিয়ার স্টুডেন্ট ভিসার নির্দিষ্ট শর্তে part-time job করতে পারবে। এই ভিসার আর একটি সুবিধা হলো এই ভিসায় মালয়েশিয়া গেলে পাসপোর্ট আপনার কাছেই থাকবে। যার ফলে আপনি নিজের খুশি মত যেকোন জায়গায় যেতে পারবেন।

কলিং ভিসা:

মালয়েশিয়ায় অফিশিয়াল ভাবে কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য যে ভিসা অনুমোদন করা হয় সেটিই মূলত কলিং ভিসা। মালয়েশিয়ার বিভিন্ন কোম্পানি প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক বেদেশি কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে। তাদের যখন নতুন কর্মীর প্রয়োজন হয় তখন তারা মালয়েশিয়ান সরকারের নিকট তাদের চাহিদাপত্র প্রেরণ করে। সেই চাহিদার উপর ভিত্তি করে মালয়েশিয়ার সরকার সেই পরিমান ভিসা বিভিন্ন দেশের জন্য ইস্যু করে থাকে। তবে বিগত কয়েক বছর থেকে বাংলাদেশীদের জন্য কলিং ভিসার অনুমোদনে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তাই চাইলেও সহজে এখন মালয়েশিয়ায় যাওয়া যাচ্ছে না। 

মালয়েশিয়ার কলিং ভিসা সাধারণ ৩ বছরের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে পুনরায় এই ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করা যায়। এই ভিসার একটি অন্যতম অসুবিধা হলো এই ভিসায় মালয়েশিয়া গিয়ে নিজের স্বাধীনতা মত কাজ করা যায় না। কলিং ভিসার মাধ্যমে আপনি যে কোম্পানিতে যাবেন আপনাকে সেখানেই কাজ করতে হবে। এর বাহিরে অন্য কোথাও কাজ করার সুযোগ নেই। কারণ এই ভিসায় মালয়েশিয়া যাওয়ার সাথে সাথে তারা আপনার পাসপোর্টটি নিয়ে নিবে। যার ফলে আপনার চলাচল অটোমেটিক সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে।

শেষ কথা:

বিগত সরকারের আমলে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রক্রিয়া পুরো সিন্ডিকেটের আন্ডারে চলে যায়৷ এবং মালয়েশিয়ায় শ্রম শক্তি রপ্তানির গতি প্রায় স্থবির হয়ে যায়। যার ফলে দেশের বিশাল এক জনগোষ্ঠী মালয়েশিয়া যাওয়ার মনস্থির করলেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। তবে খুশির খবর হলো বর্তমান সরকার মালয়েশিয়ার ভিসা প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করেছেন। যার ফলে আশা করা যায় অতি দ্রুত মালয়েশিয়া ভিসা সমস্যার সমাধান হবে। যার প্রেক্ষিতে এই আলোচনায় আমরা অনলাইনে মালয়েশিয়া ভিসা চেক নিয়ে আলোচনা করলাম৷ 

Sazzadul Islam

আমি সাজ্জাদুল ইসলাম৷ দীর্ঘ সময় থেকে পাসপোর্ট, ভিসা এবং প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করছি৷ সে অভিজ্ঞতার আলোকে এখানে নিয়মিত পাসপোর্ট, ভিসা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমসাময়িক তথ্য ও আপডেট দেওয়ার চেষ্টা করি।

3 Comments

  1. মন্তব্য কলামে কি লিখতে হবে?

    ReplyDelete
Previous Post Next Post
This Template Designed By E10Script