পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে একাধিক জন্ম নিবন্ধন থাকলে বাতিলের নির্দেশ
দেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন-২০০৪ অনুযায়ী প্রতিটি নাগরিকের জন্য জন্ম ও মৃত্যুর অনলাইন নিবন্ধন বাধ্যতামূলত৷ কোন ভাবেই একজন ব্যক্তির একাধিক জন্ম নিবন্ধন থাকাটা আইনসঙ্গত নয়। এই আইনের ৮(১) ধারা অনুসারে কোন শিশু জন্ম গ্রহন করার পর ৪৫ দিনের মধ্যে তার জন্ম নিবন্ধন করতে হবে৷ এবং আবেদনের তথ্য যাচাই বাছাই পূর্ব একজন ব্যক্তির জন্য কেবল মাত্র একটি সনদই অনলাইনে ইস্যু করা হবে৷ মিথ্যা তথ্য দিয়ে একাধিক জন্ম সনদ তৈরি দন্ডনীয় অপরাধ। কারণ তা পরবর্তীতে বিভিন্ন সনাক্তকরণ ক্ষেত্রে মারাত্মক জটিলতা তৈরি করে। যার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর কোন ব্যক্তির একাধিক জন্ম নিবন্ধন সনদ থাকলে তা বালিত করার নির্দেশনা প্রদান করেছে।
আরও পড়ুন : ১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৪
একাধিক জন্ম নিবন্ধন বাতিলের নির্দেশ :
কিছু কিছু ব্যক্তির একাধিক জন্ম নিবন্ধন সনদ থাকায় ই পাসপোর্ট তৈরি করার সময় মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হয়। যার কারণে ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইংরেজি তারিখে একটি আদেশ জারি করে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের পাসপোর্ট বিভাগ। যেখানে যাদের একাধিক অনলাইন এবং অফলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ রয়েছে তাদের জন্য কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনা গুলো হলো :
একাধিক জন্ম নিবন্ধন বাতিলের উদ্যোগ গ্রহণ :
যে কোন কারনেই হোক যাদের একধিক জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি হয়েছে তাদের অতি দ্রুত একটি জন্ম নিবন্ধন সনদ রেখে বাকি গুলো বালিত করতে যথাযথ কর্তপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন-২০০৪ অনুযায়ী একাধিক জন্ম নিবন্ধন সনদ বাতিল যোগ্য। এই আইনের ১৫ক ধারা মোতাবেক সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা তার লিগ্যাল অভিভাবক জন্ম নিবন্ধন সনদ বাতিলের আবেদন করতে পারবেন।
অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের গ্রহন যোগ্যতা :
যদি ই পাসপোর্ট আবেদনকারী কোন ব্যক্তির একাধিক জন্ম নিবন্ধন সনদ পাওয়া যায় তাহলে সেই ব্যক্তির অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদটি বেশি গ্রহণ যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। তাই যাদের একাধিক জন্ম নিবন্ধন সনদ রয়েছেন কিন্তু ই পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন তাদের অনালাইন জন্ম নিবন্ধন সনদটি সঠিক আছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশন দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশ প্রদানের কারণ :
খোঁজ নিয়ে জানা যায় ইন্টারনেট সার্ভার জটিলতা জনিত কারণে এক বছর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম সাময়িক ভাবে বন্ধ ছিল। যার কারনে অনেকেই এ সময়ে ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে জেলা গুলো থেকে অফলাইনে জন্ম নিবন্ধন করিয়েছেন এবং পরবর্তীতে সার্ভার জটিলতার সমাধাণ হলে তারা পুনোরায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করেছে। তবে অনলাইন এবং অফলাইন এই দুই জন্ম নিবন্ধন সনদ করার সময় সেগুলোতে তথ্যগত কিছু ভুল ক্রুটি সংযুক্ত হয়ে যায়। ফলে ই পাসপোর্ট করানোর সময় তারা যে জন্ম নিবন্ধন গুলো জমা দিয়েছেন, তাতে পাসপোর্ট তৈরিতে এবং ই পাসপোর্টে সঠিক তথ্য নিশ্চিত করণে মারাত্মক জটিলতা তৈরি হয় । যার পরিপ্রেক্ষিতে ই পাসপোর্ট কার্যক্রমে আরও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একাধিক জন্ম নিবন্ধন বাতিলের উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে।
শেষ কথা :
ভুল তথ্য দিয়ে একাধিক জন্ম সনদ নিবন্ধন আইনত দন্ডনীয় অপরাপ। তবে ভুল করে বা অসাবধানতা বশত যদি একাধিক জন্ম নিবন্ধন হয়ে যায় তাহলে সেটা আবেদনের প্রেক্ষিতে সহজেই বাতিল করা যায়। যে কারণে গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে আদেশে যাদের একাধিক জন্ম নিবন্ধন সনদ রয়েছে তাদের দ্রুত তা বাতিলের উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলা হয়ে। এই আদেশে স্বাক্ষর করেছেন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পাসপোর্ট) মো. সাদ্দাম হোসেন।