দেশে ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ার পর থেকেই অনেকেই ই-পাসপোর্ট কি? এর সুবিধাই বা আর অসুবিধাই বা কি? কেন এমআরপি পাসপোর্ট না বানিয়ে ই-পাসপোর্ট বানাবো ইত্যাদি বিষয় গুলো নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দের মধ্যে থাকেন। যারা ফলে তারা বিভিন্ন সোর্স থেকে এই বিষয়ে জানার চেষ্টা করে। যার প্রেক্ষিতে এই পোস্টে আমরা ই-পাসপোর্টের সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা চেষ্টা করব। ইনশআল্লাহ। যাতে এই বিষয়ে আপনারা একটি স্পষ্ট ধারণা পান৷ চলুন তাহলে শুরু করি।
আরও পড়ুন : ৫বছর/১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট ফি ২০২৫
ই-পাসপোর্ট কি?
ই-পাসপোর্টের সুবিধা:
এই অংশে আমরা ই-পাসপোর্টের মৌলিক কিছু সুবিধা বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরে চেষ্টা করবো:
সুরক্ষা:
ই-পাসপোর্টের অন্যতম সুবিধা হলো এর সুরক্ষা ব্যবস্থা। ই-পাসপোর্টে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার করার ফলে ব্যবহারকারীর তথ্য সুরক্ষিত থাকে। ই-পাসপোর্টে এক ধরনের বিশেষ বায়োমেট্রিক চিপ ব্যবহার করা হয়৷ যা পাসপোর্টধারীর তথ্যের শতভাগ সুরক্ষার নিশ্চয়তা প্রদান করে।
আবেদন প্রক্রিয়া:
ই-পাসপোর্টের উল্লেখযোগ্য আর একটি সুবিধা হলো এর আবেদন পক্রিয়া। ই-পাসপোর্ট করার জন্য যে কোন সময় অনলাইনেই আবেদন করা যায়। আবেদন করার জন্য আর দিনের পর দিন স্থানীয় পাসপোর্ট অফিসে ঘুরতে হয়না। আগে যেমন পাসপোর্টের আবেদনের জন্য দালালের সাহায্য নিতে হতো এখন আর সেটি লাগে না। আর ই-পাসপোর্টের আবেদন প্রক্রিয়াও সহজ এবং দ্রুত সময়ে করা যায়। এছাড়া অনলাইনে ই-পাসপোর্ট রিনিউয়ের আবেদন করাও বেশ সহজ। যা পাসপোর্টের আবেদন রিলেটেড ঝামেলা অনেকটাই কমিয়ে এনেছে।
রিলেটেড পোস্ট : এ-চালান দিয়ে পাসপোর্ট ফি জমা ২০২৫
পাসপোর্টের অবস্থা যাচাই:
ই-পাসপোর্টের আবেদন করার যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি পাসপোর্ট হয়েছে কিনা তা যাচাই করাও বিশেষ সুবিধা রয়েছে। ই-পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে যেমন আবেদন করা যায় তেমনি অনলাইনে আপনার আবেদনের অবস্থা বা স্ট্যাটাসও চেক করা যায়। আপনি দেশে কিংবা দেশের বাহিরে যে কোন স্থান থেকে অনলাইনে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা, তথ্যের নিশ্চিতকরণ, পাসপোর্টের বর্তমান অবস্থা বা পাসপোর্ট বিতরণের জন্য রেডি হয়েছে কিনা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন। এর জন আপনাকে আর সশরীরে অঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসা যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
ই-গেট ব্যবহার:
ই-পাসপোর্টের অন্যতম আধুনিক একটি সুবিধা হচ্ছে এটি। ই-পাসপোর্ট ধারীদের ই-গেট সম্পন্ন এয়ারপোর্ট গুলোতে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া বেশ সহজ হয়ে যায়। যেসব এয়ারপোর্টে ই-গেট রয়েছে সেসব এয়ারপোর্টে ই-পাসপোর্ট ধারীরা সহজেই ই-গেট ব্যবহার করে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ন করতে পারেন। তাদের আলাদা করে অপেক্ষা বা লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন হয় না। তবে সব এয়ারপোর্টে ই-গেট সুবিধা না থাকার কারণে ই-পাসপোর্টের এই সুবিধাটি যথাযথ ভাবে পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না৷ তবে কিছু বছর পর এর পুরোপুরি সুবিধা পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন : ফেসবুক ফলোয়ার বাড়ানোর উপায়
ই-পাসপোর্টের অসুবিধা:
আধুনিক এবং উন্নত পাসপোর্ট ব্যবস্থার নাম হচ্ছে ই-পাসপোর্ট। তাই ই-পাসপোর্টের উল্লেখযোগ্য তেমন কোন অসুবিধা নেই বললেই চলে। ই-পাসপোর্টের অসুবিধার মধ্যে একটি হচ্ছে এ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের অভাব। এছাড়া আর তেমন কোন অসুবিধা নেই বললেই চলে। আবেদনকারী অনেক ক্ষেত্রেই ই-পাসপোর্ট কি, ই-পাসপোর্টের জন্য কি কি কাগজ পত্র প্রয়োজন সেটি তারা জানেই না।
যার ফলে আবেদন করার সময় অনেকেই ভুল করে থাকে। আর ই-পাসপোর্ট আবেদনে সঠিক তথ্য সরবরাহ না করার কারণে ভুল তথ্যের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া অনেক সময় স্থগিত হয় এবং পাসপোর্টের প্রাপ্তি বা বিতরণের সমস্যা হয়।
শেষ কথা :
ই-পাসপোর্টের আবেদন করার পূর্বে প্রত্যেক আবেদনকারীর ই-পাসপোর্টের সুবিধা ও অসুবিধা গুলো সম্পর্কে জানাটা গুরুত্বপূর্ণ। পাশিপাশি ই-পাসপোর্টের আবেদন এবং ফি পরিশোধের নিয়ম গুলো জানাও আবশ্যই। আর এই বিষয় গুলো সম্পর্কে না জানার কারণেই মূলত প্রতারকরা আবেদনকারীর নিকট হতে পাসপোর্ট করিয়ে দেওয়ার নামে বিভিন্নভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করে। তবে আশা করি এই আলোচনা আমরা আপনাদের ই-পাসপোর্টের সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে একটি স্পষ্ট ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি। এমন গুরুত্বপূর্ন তথ্য পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।