পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৪
বর্তমানে বাংলাদেশ এম আর পি পাসপোর্ট থেকে ই পাসপোর্টের যুগে রুপান্তর হয়েছে। ই পাসপোর্ট হলো একটি বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট। যেখানে একটি ইলেকট্রনিক চিপের মধ্যে পাসপোর্টধারীর প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সংরক্ষিত থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশ সহ ১২০ টি দেশে ই পাসপোর্ট চালু আছে। বাংলাদেশ ই পাসপোর্ট চালু হওয়ার ফলে ই পাসপোর্টধারী ব্যক্তিগণ ইমিগ্রেশনের ঝামেলা এড়িয়ে ই গেট ব্যবহার করে সহজেই বিদেশ ভ্রমণ করতে পারেন। অনেকে ই পাসপোর্টকে আলাদা কোন পাসপোর্ট মনে করে থাকেন। বাস্তবে ই পাসপোর্ট আলাদা কোন ধরনের পাসপোর্ট নয় এটি মূলত এম আর পি পাসপোর্টেরই ডিজিটাল সংস্করণ। যেখানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং নিরাপত্তা ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে পাসপোর্ট ডিজিটাল হওয়ায় ফলে পাসপোর্ট করার পক্রিয়াও বেশ সহজ এবং ঝামেলা মুক্ত হয়েছে। এই আলোচনায় আমরা পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৪ নিয়ে আপনাদের একটি স্পষ্ট ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ৷
ই-পাসপোর্ট কি?
পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৪ :
আমরা এতক্ষন আপনাদের ই পাসপোর্ট সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করলাম। এবার মূল আলোচনায় আসা যাক। যদিও ৫ বছর বা ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করার নিয়ম এবং খরচের উপর আমাদের সাইটে আলাদা আলাদা পোস্ট রয়েছে। তবুও আপনাদের সুবিধার জন্য পুরো বিষয়টাকে আমরা একটি পোস্টের মাধ্যমে আর একবার গোছালো ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করলাম।
পাসপোর্ট করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সংগ্রহ করে নিজের কাছে রাখতে হবে। যেমন : জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্ম নিবন্ধন সনদ, পিতামাতার NID কার্ড, নাগরিকত্ব সনদ, পেশার প্রমান পত্র ইত্যাদি। পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজ লাগে তার উপর আমাদের একটি বিস্তারিত লেখা রয়েছে আপনি চাইলে সেটি দেখে নিতে পারেন : ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে।
উপরে উল্লেখিত প্রয়োজনীয় কাগজ গুলো সংগ্রহ করা হয়ে গেলে পরবর্তী ধাপে আপনাকে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে হবে৷ আপনি এই কাজটি নিজে কিংবা অন্য কারো সাহায্য নিয়ে করে ফেলতে পারেন। যদি আপনি নিজে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে চান তাহলে প্রথমে https://www.epassport.gov.bd/ সাইটে আপনার একটি একাউন্ট খুলে নিতে হবে। একাউন্ট খোলা হয়ে গেলে লগ ইন করার পর আবেদনের জন্য উক্ত সাইটের মেনু আপশন থেকে Apply Online -এ ক্লিক করতে হবে। অথবা Apply Onlie for e-Passport/Re-Issue বক্স থেকে Directly to Online Application বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী সকল স্টেপ যথাযথ ভাবে ফুলফিল করতে হবে। কিভাবে স্টেপ বাই স্টেপ ই পাসপোর্টের আবেদন করতে হয় তা জানতে এই পোস্টটি দেখুন : ই পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম অনলাইন।
অনলাইনে আবেদন করা হয়ে গেলে নির্দিষ্ট তারিখে গিয়ে আপনার ছবি, ফিঙ্গার প্রিন্ট, আইরিশ এবং এবং প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র জমা দিলেই দিলেই মোটামুটি আপনার কাজ শেষ। এরপর পাসপোর্ট অফিস আপনার প্রদেয় সকল কাগজ পত্র যাচাই বাছাই করা শেষে আপনার পারপোর্টটি রেডি হলে আপনাকে জানাবে। তখন আপনি আপনার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে পাসপোর্টটি সংগ্রহ করতে পারবেন। আপনার পাসপোর্ট রেডি হয়েছে কিনা সেটি আপনি অনলাইনেও চেক করতে পাবেন। তার জন্য এই পোস্টটি ভালভাবে অনুসরণ করুন : ডেলিভারি স্লিপ দিয়ে ই পাসপোর্ট চেক করুন।
পাসপোর্ট করার খরচ :
পাসপোর্ট করার খরচ মূলত নির্ভর করে আপনি কত পেজের ই পাসপোর্ট নিবেন এবং কত দিনের মধ্যে ডেলিভারি নিবেন তার উপর। তবে পাসপোর্ট করতে যে খচর হয় সেটি হচ্ছে একেবারে সরকারি ফি। এর বাহিরে দালাল বা অন্য কোন খরচ হয় না। আর এই ফি দেওয়াটাও এখন অনেকটা ঝামেলা মুক্ত। কারণ আপনি মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করেই এ চালান এর মাধ্যমে ই পাসপোর্টের আবেদন করতে পারবেন। এই বিষয়ে আমাদের আলাদা একটি পোস্ট আছে আপনি আগ্রহী হলে সেটি দেখে নিতে পারেন।
সম্পর্কিত পোস্ট : এ চালান দিয়ে অনলাইনে ই-পাসপোর্ট ফি দেওয়ার নিয়ম
৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট ফি :
৪৮ পৃষ্টার রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ৪,০২৫ টাকা, এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ৬,৩২৫ টাকা এবং সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ৮,৬২৫ টাকা।
৬৪ পৃষ্টার রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ৬,৩২৫ টাকা, এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ৮,৬২৫ টাকা এবং সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ১২,০৭৫ টাকা।
১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট ফি :
৪৮ পৃষ্টার জন্য রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ৫,৭৫০ টাকা, এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ৮,০৫০ টাকা এবং সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ১০,৩৫০ টাকা।
৬৪ পৃষ্টার জন্য রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ৮,০৫০ টাকা, এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ১০,৩৫০ টাকা এবং সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ১৩,৮০০ টাকা।
উল্লেখ্য
- রেগুলার ডেলিভারির সময় হচ্ছে ১৫ কার্যদিবস।
- এক্সপ্রেস ডেলিভারির সময় হচ্ছে ০৭ কার্যদিবস।
- সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির সময় হচ্ছে ০২ কার্যদিবস।
শেষ কথা :
পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ নিয়ে এই ছিল মোটামুটি আলোচনা। আসলে এটি একটি বিশাল আলোচনার বিষয় যা এক পোস্টে কভার করা সম্ভব নয়। তাই এখানে আমরা সংক্ষিপ্ত ভাবে আপনাদের এই বিষয়ে একটি ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আপনি যদি কোন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আমাদের মেনশন দেওয়া পোস্ট গুলো পড়ুন। আপনার সকল বিষয় ক্লিয়ার হয়ে যাবে। এছাড়াও আমাদের ব্লগটি ডেডিকেটেডলি পাসপোর্টের উপর তৈরি করা। তাই আমাদের ব্লগটি ঘুরে দেখুন অনেক প্রয়োজনীয় পোস্ট খুঁজে পাবেন। যা আপনার ই পাসপোর্ট তৈরি করতে সাহায্য করবে।