৫ বছর / ১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি ২০২৪

ভ্রমন, উচ্চ শিক্ষা বা চিকিৎসা যে কোন প্রয়োজনে বিদেশ যাত্রার প্রধান এবং  অপরিহার্য পদক্ষেপ হচ্ছে ই পাসপোর্ট। দেশে ই পাসপোর্ট চালু হওয়ার ফলে এখন কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই খুবই সহজে ঘরে বসেই ই পাসপোর্টের আবেদন করা যায়। এবং সাথে সাথেই মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে ই পাসপোর্টের আবেদন ফিও পরিশোধ করা। তবে অনেকেই মাঝেই ই পাসপোর্টের আবেদন ফি এবং আবেদন পক্রিয়া নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা যায়। ফলে অনেক ক্ষেত্রে এর সুবিধা গ্রহণ করে অসাধু কিছু দালালেরা। যার পরিপ্রেক্ষিতে এই পোস্টে আমরা ৫ বছর / ১০ বছর মেয়াদি মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। চলুন তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক। 

আরও পড়ুন : এ চালান দিয়ে ই পাসপোর্টের ফি প্রদানের নিয়ম ২০২৪

ই পাসপোর্ট আবেদন ফি

ই পাসপোর্ট ফি :

পাসপোর্টের আবেদন ফি নির্ভর করে মূলত কত বছরের জন্য ও কত পেজের পাসপোর্ট নিবেন এবং কত দিনের মধ্যে ডেলিভারি নিবেন তার উপর। সব ধরণের পাসপোর্টের জন্য মূলত একক কোন আবেদন ফি নির্ধারণ করা নেই। তাই আপনার প্রয়োজন এবং চাহিদার উপর ভিত্তি করে ই পাসপোর্টের আবেদন ফি আলাদা আলাদা হতে পারে।

আবার পাসপোর্টের পেজ সংখ্যা এবং ডেলিভারির পাশাপাশি আপনি কোথা থেকে পাসপোর্টের আবেদন করেছেন তার উপর ভিত্তি করেও ই পাসপোর্টের আবেদন ফি কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। যেমম আপনি বাংলাদেশ থেকে আবেদন করলে এবং আপনার নিকটস্থ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করলে আপনার আবেদন ফি একরকম হবে। আবার দেশের বাহিরে থেকে আবেদন করলে এবং উক্ত দেশের মিশন থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করলে আপনার আবেদন ফি অন্যরকম হবে।

তবে দেশে এবং দেশের বাহিরে যেহেতু ৫ বছর এবং ১০ বছর উভয় মেয়াদি ই পাসপোর্ট পাওয়া যায়। সেজন্য এই দুই ধরনের পাসপোর্টেরই আবেদন ফি আমরা আলাদা আলাদা ভাবে দেখানোর চেষ্টা করেছি। 

৫ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি :

আপানার লোকেশন, অবস্থা এবং পাসপোর্টের ধরন অনুযায়ী ৫ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্টের আবেদন ফি হবে নিম্নরূপ।

বাংলাদেশের মধ্যে ই-পাসপোর্টের আবেদন ফি : 

৪৮ পৃষ্টার রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ৪,০২৫ টাকা, এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ৬,৩২৫ টাকা এবং সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ৮,৬২৫ টাকা। 

৬৪ পৃষ্টার রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ৬,৩২৫ টাকা, এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ৮,৬২৫ টাকা এবং সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ১২,০৭৫ টাকা। 

বাংলাদেশী দূতাবাসে ই-পাসপোর্টের আবেদন ফি (সাধারণ) :

৪৮ পৃষ্টার রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি $১০০ ডলার এবং এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি $১৫০ ডলার। 

৬৪ পৃষ্টার রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি $১৫০ ডলার এবং এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি $২০০ ডলার।

বাংলাদেশী দূতাবাসে ই-পাসপোর্টের আবেদন ফি (শ্রমিক/শিক্ষার্থী) :

৪৮ পৃষ্টার রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি $৩০ ডলার এবং এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি $৪৫ ডলার। 

৬৪ পৃষ্টার রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি $১৫০ ডলার এবং এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি $২০০ ডলার।

উল্লেখ্য 

  • রেগুলার ডেলিভারির সময় হচ্ছে ১৫ কার্যদিবস।
  • এক্সপ্রেস ডেলিভারির সময় হচ্ছে ০৭ কার্যদিবস।
  • সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির সময় হচ্ছে ০২ কার্যদিবস।

১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি :

আপানার লোকেশন, অবস্থা এবং পাসপোর্টের ধরণ অনুযায়ী ১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্টের আবেদন ফি হবে নিম্নরূপ।

বাংলাদেশের মধ্যে ই পাসপোর্টের আবেদন ফি :

৪৮ পৃষ্টার জন্য রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ৫,৭৫০ টাকা, এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ৮,০৫০ টাকা এবং সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ১০,৩৫০ টাকা। 

৬৪ পৃষ্টার জন্য রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ৮,০৫০ টাকা, এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ১০,৩৫০ টাকা এবং সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ১৩,৮০০ টাকা। 

বাংলাদেশী দূতাবাসে ই পাসপোর্টের আবেদন ফি (সাধারণ) :

৪৮ পৃষ্টার রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি $১২৫ ডলার এবং এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি $১৭৫ ডলার। 

৬৪ পৃষ্টার রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি $১৭৫ ডলার এবং এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি $২২৫ ডলার।

বাংলাদেশী দূতাবাসে ই পাসপোর্টের আবেদন ফি (শ্রমিক/শিক্ষার্থী) :

৪৮ পৃষ্টার রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি $৫০ ডলার এবং এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি $৭৫ ডলার। 

৬৪ পৃষ্টার রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি $১৭৫ ডলার এবং এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি $২২৫ ডলার।

উল্লেখ্য 

  • রেগুলার ডেলিভারির সময় হচ্ছে ১৫ কার্যদিবস।
  • এক্সপ্রেস ডেলিভারির সময় হচ্ছে ০৭ কার্যদিবস।
  • সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির সময় হচ্ছে ০২ কার্যদিবস।

শেষ কথা : 

আশা করছি ৫ বছর / ১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি নিয়ে আর কোন ঝামেলায় পরবেন না। এই সামান্য বিষয়টুকু আমাদের না জানা থাকার কারণে প্রায় সময় আমরা বিভিন্ন ঝামেলায় পড়ে যাই। বা বিভিন্ন ভাবে প্রতারিত হই। তবে একটু সচেতন হলেই কিন্তু আমরা খুব সহজেই এমন প্রতারণা থেকে মুক্ত থাকতে পারি। আর এই ফিও কিন্তু আমরা অটোমেটেড চালানের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারি। তাই আপনি ই পাসপোর্টের জন্য নিজে আবেদন করুন বা অন্য কোন মাধ্যমে আবেদন করুন ই পাসপোর্টের এই বেসিক তথ্য গুলো একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে আপনার অবশ্যই জেনে রাখা উচিত। আজ এই পর্যন্তই। ই পাসপোর্ট রিলেটেড খুঁটিনাটি সব তথ্য পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ। 

Next Post Previous Post